আলাদিনের জাদুর (প্রদীপ) চেরাগের গল্পটি সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। কিন্তু নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ৪নং আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের ভবভদ্রী গ্রামের মনির হোসেন সাজুর জাদুর (প্রদীপ) চেরাগের গল্পটি অনেকেরই অজানা। গত ২৪ জুলাই (শুক্রবার) স্থানীয় একজন সংবাদকর্মী (কবির আহমদ ফারুক) এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইয়াবা সম্রাট মনির হোসেন সাজুকে নিয়ে একটি পোষ্ট করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২৫ জুলাই (শনিবার) সাজু চাঁদাদাবীর মিথ্যা অভিযোগ করে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গত ২৭ জুলাই (সোমবার) সরেজমিনে খোঁজ নিতেই বের হয়ে আসতে থাকে সাজুর ইয়াবা বিক্রি করে কোটিপতি হওয়ার গল্প। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় জৈনক ব্যক্তি জানান, মনির হোসেন সাজুর বাবা আব্দুর রব খোকা মারা যাওয়ার পরে তার জীবন দুঃখে কষ্টে চলতে থাকে। এক পর্যায়ে সে তার ঘরভিটে বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে চলে যায় শ্বশুর বাড়ি। বছর শেষ হওয়ার আগেই ফিরে আসে ইয়াবা এবং বিপুল অংকের টাকা নিয়ে। সময়ের পরিবর্তনে হয়ে ওঠে ইয়াবা সম্রাট সাজু। বর্তমানে সাজু ২২ লাখ টাকা দিয়ে নতুন পিকাপভ্যান কেনাসহ বিপুল অর্থের মালিক। মনির হোসেন সাজুর সাথে ওই গ্রামের সাহাদাত হোসেন ও তাঁর ছোট ভাই বাবুল তার পাশের বাড়ির মাসুদ, ধীতপুর গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে নুর উদ্দিনসহ চক্রটি ইয়াবা বিক্রিতে খুবই সক্রিয়। ইয়াবা কারবারে চক্রটির বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলেও সাজু বরাবরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর নাগালের বাহিরে থেকে যায়। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আগে তারাও জেল থেকে বের হয়ে পুনরায় মাদক বিক্রিতে লিপ্ত হচ্ছে। স্থানীয়রা আরো জানায়, সাজুর মাদক ব্যবসায় অন্তত ১৫ জন যুক্ত রয়েছে।
এ বিশাল চক্রটি প্রতি মাসে মাদক বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মাদকের গ্রাসে দু’টি জেলার সংযোগস্থল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের পথে। এ এলাকায় মাদকের বিস্তারে অভিভাবক ও সচেতন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।