নাটোরের সিংড়ায় বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। আত্রাই নদীর পানির তোড়ে শতশত বাড়ি ঘর, ফসলি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট ভেসে যাচ্ছে। দুটি ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বিছিন্ন।
সিংড়ায় আত্রাই নদী বিধ্বংসী রূপ নিয়েছে। দুইপাড়ের গাছপালা বাড়ি ঘর সব দুমড়ে মুচড়ে খড়কুটা হয়ে স্রোতের তোড়ে নদীতে। বাঁধ সড়ক কোন কিছুই আটকাতে পারছে না আত্রাই নদীর তীব্র স্রোতকে। একের পর এক জনপদ পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
বাড়িঘর রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অসহায় এলাকার মানুষ। কোমর সমান পানিতে থৈ থৈ করছে এলাকার পর এলাকা। ঘরের পাশে কেউ নৌকায়, আবার কেউ জীবন বাঁচাতে বাড়ির সরঞ্জাম আর সম্পদ ছাগল নিয়ে ট্রাক্টরের উপর, কেউ বা দোকানের টং ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।
পানি চাপে বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) সকালে সিংড়া-কলম সড়কের শোলাকুড়ায় এবং রাখালগাছা-তাজপুর সড়কের হিয়াতপুরে দুই স্থানে ৪০০ ফুট বিলীন। বিচ্ছিন্ন এখন সিংড়া সদরের সঙ্গে কলম ও তাজপুরের ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর ধানের ক্ষেত।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী জানান, সব শেষ হয়ে গেছে। স্রোতে গাছ-পালা সব চলে গেছে। পুকুরের মাছও ভেসে চলে গেছে।
নাটোর চলনবিল জীববৈচিত্র রক্ষা কমিটি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, পানির স্রোত অনেক বেশি হওয়ায় বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে প্রায় অর্ধলাখ মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্তরা দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে আত্রাই নদী দখল করে ২০টি সোঁতি জাল অপসারণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের কাছে।
অবশ্য স্বস্তির কথা জানায়, স্থানীয় প্রশাসন। সোঁতি জাল অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে।
নাটোর সিংড়া সহকারী কমিশনার রাকিবুল হাসান বলেন, এরইমধ্যে আমরা সবগুলো সোঁতি জাল অপসারণ করা হয়েছে। এছাড়াও দুই বাঁধ ভেঙে গেছে। সেটা অপসারণের কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।
আত্রাই নদীর পানি সিংড়া পয়েন্টে বিপদ সীমার ১১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর তৃতীয় দফার এই ভয়াবহ বন্যায় এ পর্যন্ত ৭ হাজারের বেশি বাড়ি এবং প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে।