ইয়াবা মাফিয়া রোহিঙ্গা শফিউল্লাহ একাই আনতেন মাসে অর্ধকোটি ইয়াবা

কক্সবাজার প্রতিনিধি
সোমবার, ৪ জুলাই, ২০২২, ১২:০৯ অপরাহ্ন

ইয়াবা মাফিয়া রোহিঙ্গা শফিউল্লাহ একাই প্রতিমাসে মিয়ানমার থেকে কমপক্ষে ৪০-৫০ লাখ পিস ইয়াবা দেশে এনে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে থাকেন। আটকের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমনটি অকপটে স্বীকার করেছেন রোহিঙ্গা শফিউল্লাহ। এমনটি জানিয়েছেন উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী।

শনিবার (২ জুলাই) মাঝরাতে ২০ হাজার ইয়াবাসহ উখিয়ার লম্বাশিয়া (ক্যাম্প-১ ডব্লিউ) আশ্রয় শিবিরে অভিযান চালিয়ে শফিউল্লাহ (৩৮) কে গ্রেফতার করে উখিয়া থানা পুলিশ।

শফিউল্লাহ লম্বাশিয়া আশ্রয় ক্যাম্পের ই-ব্লকের ২ নম্বর শেডের বাসিন্দা আবদুস সালামের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদকের ৮টি মামলা রয়েছে। দেশের একটি বিশেষ বাহিনীর সোর্স পরিচয়ে ক্যাম্পে দাপিয়ে বেড়াত শফিউল্লাহ। ভয়ে অন্যরা তটস্থ থাকতো বলেই মাদক কারবারে তার বিস্তৃতি কেবল বেড়েছে বলে মনে করেন সাধারণ রোহিঙ্গারা।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, গোপন সংবাদে শফিউল্লাহকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ গভীর রাতে উখিয়ার পাতাবাড়ি পাহাড়ি এলাকা থেকে ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে। পরে শফিউল্লাহ পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, তিনি নিজেই প্রতি মাসে ৪০-৫০ লাখ ইয়াবা মিয়ানমার থেকে নানা কৌশলে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। এরপর এসব ইয়াবা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ দেন।

ওসি বলেন, শফিউল্লাহ আরও কয়েকজন বড় মাপের রোহিঙ্গা ইয়াবা মাফিয়াদের নাম বলেছে। তাদের বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চলছে।

শফিউল্লাহ ইয়াবা, আইস ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ ৮টি মামলার পলাতক আসামি উল্লেখ করে তার কাছ থেকে আরও তথ্য পেতে ১০দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী।

সূত্র মতে, শফিউল্লাহ একসময় রোহিঙ্গাদের কথিত সংগঠন আরসার ডোনার(অর্থের যোগানদাতা) ছিলেন। কিন্তু এখন আরসার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আলোচিত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী মাস্টার নবী হোসেন ও  মাস্টার মুন্না গ্রুপের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন।

সাধারণ রোহিঙ্গাদের দাবি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শফিউল্লাহ মত ১০ থেকে ১৫ হাজার বড় মাফের ইয়াবা কারবারি রয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনা গেলে ক্যাম্পে পরিপূর্ণভাবে ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ হবে।

এদিকে, আইন-শৃংঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর দেওয়া তথ্যমতে, গত জুনে মিয়ানমার থেকে পাচারের সময় বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অন্তত ৬ কেজি আইস ও ২১ লাখের বেশি ইয়াবা জব্দ করেছে।

এছাড়া চলতি ২০২২ সালের প্রথম চার (জানুয়ারি-এপ্রিল) মাসে মিয়ানমার থেকে পাচারের সময় আরও প্রায় ১ কোটি ইয়াবা এবং ৫০ কেজির বেশি আইস উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজিবি একাই উদ্ধার করে ৪২ কেজি আইস। অন্যদিকে পুরো ২০২১ সালে বিভিন্ন বাহিনীর হাতে উদ্ধার হয়েছিল ২ কোটি ৫৯ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫০ ইয়াবা ও ২৩ কেজি ৮০২ গ্রাম আইস।

Facebook Comments
Print Friendly, PDF & Email
সংবাদটি শেয়ার করুন


আরো সংবাদ
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com