শ্বশুরের যৌন হয়রানী ধামাচাপা দিতে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে এমন এক অভিযোগ এনে গোসাইরহাট থানায় শশুর সহ- পাঁচ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন শরীয়তপুর ডামুড্যা উপজেলার কনেশর ইউনিয়নের সৈয়দবস্তা গ্রামের মোঃ আলমগীর ফকির (৬২) নামে এক কলেজ ছাত্রীর দরিদ্র বাবা।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় এলাকা বাসী সূত্রে জানা যায়, মোঃ আলমগীর ফকির এর দ্বিতিয় কন্যা পূর্ব মাদারীপুর সরকারী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মোসাম্মৎ তাঁরা আক্তার (১৯) এর সাথে গত ১৫ জানুয়রী শুক্রবার ডামুড্যা উপজেলার শিধুলকুড়া ইউনিয়নের বড় শিধুলকুড়া ঘোলপার গ্রামের, মোঃ গিয়াসউদ্দিন খাঁন, এর ছেলে বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী মোঃ ফয়সাল আহাম্মেদ খাঁন(৩৫) এর সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের পরে, তাঁরা আক্তারকে নিয়ে যাওয়া হয় শ্বশুর গিয়াসউদ্দিন খাঁন এর বর্তমান ঠিকানা ঢাকা সাভার বিড়লীয়া ইউনিয়ন খনিজ নগর এলাকায়। কিছুদিন পরে বাবার বড়ি আসতে চাইলে নানা সমস্যা দেখিয়ে বাধা দেয় শ্বশুর গিয়াসউদ্দিন, মাঝে মধ্যে মুঠোফোনে পরিবারের লোকজনকে জানাতেন শ্বশুর গিয়াসউদ্দিন এর খারাপ আচরনের কথা।
প্রায় ২ মাস পরে শ্বশুর গিয়াস উদ্দিন এর সঙ্গে বাবার বাড়ি আসেন তাঁরা আক্তার, পরিবারের লোকজনকে খুলে বলেন স্বামী-ফয়সাল আহাম্মেদ এর অক্ষমতা ও শ্বশুর গিয়াসউদ্দিন এর যৌন হয়রানীর কথা। পূনরায় শ্বশুর বাড়ি যেতে অনিচ্ছা পোষন করেন, কলেজ ছাত্রী তারা আক্তার। তবুও বাবা আলমগীর ফকির, মাতা শাহিদা বেগম, সামাজিকতা ও মান-সম্মানের বিষয় চিন্তা করে মেয়েকে বুঝিয়ে শুনিয়ে শ্বশুর গিয়াসউদ্দিন এর সঙ্গে পূনরায় শ্বশুর বাড়িতে পাঠান তাঁরা আক্তার কে।
পূনরায় শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তাঁরা আক্তার, মুঠোফোনে বাবা আলমগীর ফকির, মাতা শাহিদা বেগম ও বড় বোন আলো বেগমকে, জানান শ্বশুরের যৌন হয়রানী সহ-স্বামীর পরিবারের লোকজনের শারীরিক ও মানসিক নানা প্রকার নির্যাতনের কথা, চলে আসতে চায় বাবার বড়িতে। গত ১ আগষ্ট রাত ৯টার দিকে ঢাকা থেকে প্রাইভেট গাড়ী ভাড়া করে শ্বশুর গিয়াসউদ্দিন, গোসাইরহাট উপজেলা ইদিলপুর ইউনিয়ন কালিখোলা ধিপুর গ্রামে মেয়ে জামাই, মিজান পেদার বাড়িতে নিয়ে আসেন পুত্রবধূ তাঁরা আক্তার কে।
কলেজ ছাত্রীর বাবা আলমগীর ফকির জানান গত ২ আগস্ট সকাল ১০ টার দিকে আমার মেয়ে আমাকে মোবাল ফোনে ফোন দিয়ে কান্যা জড়িত কন্ঠে বলেন, ননদ জামাই বাড়িতে গোসাইরহাটে আছি, গত কাল রাতে আমার শ্বশুর আমাকে এখানে নিয়ে আসছে আমি আমাদের বাড়িতে আসতে চাই আমার শশুর আমাকে আসতে দিচ্ছে না। আমার শ্বশুর, ননদ জামাই ও ননদ আমাকে মারপিট করেছে বাবা তুমি এসে আমাকে নিয়ে যাও।
দুপুর ১২ টার দিকে আমার মেয়ের ননদ জামাই মিজান পেদা মোবাইল ফোনে আমাকে জানান আমার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে দুপুর ১ টার দিকে আমি ঘটনা স্থানে যাই এবং গোসাইরহাট থানায় আমার মেয়ের লাশ দেখতে পাই। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তাই আমি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে গোসাইরহাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছি। যাহার- জি. আর নং ২/তারিখ ৪/৮/০২১ খ্রিঃ গোসাইরহাট থানার অফিসার ইনর্চাজ সাথে মুঠো ফোনে আলাপ কালে তিনি বলেন, থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে ,আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।