যাত্রীবেশে একসঙ্গে উঠতেন অটোরিকশায় তারা। কিছু দূর যাওয়ার পর সেখানে বসেই সবাই খেতেন জুস। খেতে দেওয়া হতো অটোরিকশা চালককেও। তবে চালককে দেওয়া সেই জুসের বোতলে মেশানো থাকতো চেতনানাশক ওষুধ। আর তা খেয়ে চালক অজ্ঞান হয়ে পড়লে সেই অটোরিকশা নিয়ে চম্পট দিতেন তারা।
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্রের দুই নারীসহ চার সদস্যকে গ্রেফতারের পর বেড়িয়ে এসেছে এমন তথ্য। শুক্রবার (২ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান।
গ্রেফতাররা হলেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর খোরশেদ আলম (৩৬), নেত্রকোনার কলমাকান্দার বকুল মিয়া (২৫), একই উপজেলার জীবন রহমানের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার (২৬) এবং নান্দাইল উপজেলার নজরুল ইসলামের স্ত্রী শেফালী বেগম (৩০)। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) গাজীপুর জেলার হোতাপাড়ার মণিপুর বাজার থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান বলেন, ১৬ এপ্রিল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে শাহীনূর রহমান (৫২) নামে এক অটোচালকের লাশ শনাক্ত করেন স্বজনরা। এ ব্যাপারে ১৯ এপ্রিল গৌরীপুর থানায় নিহতের স্ত্রী পারভীন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।
তিনি আরও বলেন, সেই মামলার তদন্তে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ডিবির ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে একটি দল দীর্ঘ আড়াই মাসের চেষ্টায় ওই চক্রটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরে বৃহস্পতিবার গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, চক্রটি নতুন অটোরিকশা ও অপেক্ষাকৃত বয়স্ক চালককে টার্গেট করত। তারপর নির্দিষ্ট স্থানের কথা বলে তারা অটোটি রিজার্ভ করত। পথে চালককে চেতনানাশকমিশ্রিত জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে দুইজন তাকে নিয়ে কাছাকাছি কোনো হাসপাতালে ভুয়া ঠিকানায় ভর্তি করে চলে যেত। আর চক্রের অপর সদস্যরা অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যেত।