এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধের প্রস্তাব ডিসিদের

অন্যদৃষ্টি অনলাইন
সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৩, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের রাজনীতির বাইরে রাখার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। 

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) থেকে শুরু হবে তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন। সেখানে আলোচনার জন্য এ প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জানা গেছে, আসন্ন ডিসি সম্মেলন সামনে রেখে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রস্তাবটি নিয়ে আগামীকাল ২৪ জানুয়ারি বিকেল সোয়া ৩টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের সেশনে আলোচনা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এতে উপস্থিত থাকবেন।

তিন দিনের জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২৪ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২৬ জানুয়ারি শেষ হবে। এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ৬৪ জেলার ডিসির কাছে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব আহ্বান করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তাদের কাছ থেকে আসা সেসব প্রস্তাব এরই মধ্যে যাচাই-বাছাইও সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের প্রায় ৯৫ ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বেসরকারি। বর্তমানে সারা দেশে শুধু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অধীন ২০ হাজার ২৭৭টি এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজ আছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬০৮ জন।

এ ছাড়া ২ হাজার ১৩৮টি এমপিওভুক্ত কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০ হাজারের বেশি শিক্ষক সরকার থেকে মূল বেতন পান। আরও দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান নতুন করে এমপিওভুক্ত হয়েছে। তবে এখনো এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে মূল বেতন পাওয়া শুরু করেননি। এ ছাড়া সারা দেশে এমপিওভুক্ত ৮ হাজার ২২৮টি মাদ্রাসা আছে। এগুলোতে শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যা ১ লাখ ৬৪ হাজার।

বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের রাজনীতি থেকে বিরত রাখতে আচরণ বিধিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম। নিজ প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরাসরি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ থাকছে। এতে শ্রেণি কার্যক্রমে তাঁদের দায়সারা আচরণ পরিলক্ষিত হয়।

তিনি বলেন, বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের জন্য সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার মতো সুনির্দিষ্ট বিধিমালা প্রণয়ন করা হলে শিক্ষকতা পেশায় থেকে রাজনৈতিক সুবিধা গ্রহণে শিক্ষকদের নিরুৎসাহিত করা সম্ভব হবে। শিক্ষকতার পাশাপাশি ঠিকাদারি, সাংবাদিকতাসহ একাধিক পেশায় নিয়োজিত থাকার প্রবণতা রোধ হওয়া এবং শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে আন্তরিক হবেন।

এ ছাড়া উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) চেয়ারম্যান করাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কে এ রকম অন্তত ২৪৪টি প্রস্তাব এসেছে ডিসিদের পক্ষ থেকে। সম্মেলনে তিন দিনে ২৪টি অধিবেশনে এসব প্রস্তাবসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তার ভিত্তিতেই নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ডিসি সম্মেলন উদ্বোধনের পর করবী হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন ডিসিরা। সম্মেলন থেকে ডিসিদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। ডিসিরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুষ্ঠানের পরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক কার্য অধিবেশন হবে।

Facebook Comments
Print Friendly, PDF & Email
সংবাদটি শেয়ার করুন


আরো সংবাদ
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com