কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় তিনজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড ও সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই রায়ে আরও ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মামলায় দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের মৃত নুরু বিশ্বাসের ছেলে হোসেন রানা, একই গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে ওয়াসিম রেজা ও ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার কাটদাহ গ্রামের আলী জোয়ার্দ্দারের ছেলে মানিক জোয়ার্দ্দার।
অপরদিকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়া মশান গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে ইদ্রিস ওরফে মোটা জসিম, খন্দকার রবিউল ইসলামের ছেলে খন্দকার তৈমুল ইসলাম বিপুল, নুর বিশ্বাসের ছেলে ফারুক, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মতিমিয়া রেলগেট চৌড়হাস এলাকার খন্দকার মোছাদ্দেক হোসেন মন্টুর ছেলে উল্লাস খন্দকার, উদিবাড়ী এলাকার আমিরুল ইসলামের ছেলে পলাতক মনির, পূর্ব মজমপুরের মৃত আব্দুল খালেক চৌধুরীর ছেলে বিপুল চৌধুরী ও দৌলতপুর উপজেলার পচাভিটা গ্রামের মৃত মোজাহার মোল্লার ছেলে আব্দুল মান্নান মোল্লা।
এদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও ছয় আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী জানান, যশোরের শার্শা এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুলের সঙ্গে মোবাইলে এক নারীর সম্পর্ক গড়ে ওঠার জেরে ২০০৯ সালের ২৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীরসহ চারজনকে অপহরণ করে দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামে আটকে রাখা হয়। পরে সবার বাড়িতে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এরমধ্যে জাহাঙ্গীরের ভাই অপহরণকারীদের কবল থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। পরে অপহরণের প্রমাণ আড়াল করতে ২৫ নভেম্বর রাতে আসামিরা জাহাঙ্গীরসহ তিনজনের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখেন।
এ ঘটনায় ২ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীরের বড় ভাই ইলিয়াছ কবির বকুল বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় দেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অপর দুটি হত্যা মামলা এখনো বিচারাধীন।