কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন পদে ১৫ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ ও উত্তীর্ণ ৩৫২ জনের তালিকা প্রকাশের পর অনিয়ম অভিযোগে সম্প্রতি নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
গত ৭ জুলাই নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি স্বাক্ষরিত পত্রে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এতে পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের অনেকেই চাকরির বয়স হারিয়ে ভুগছেন চরম হতাশায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, স্টেনোগ্রাফার কাম কম্পিউটার অপারেটর, অ্যাকাউনটেন্ট, স্টোরকিপার, সহকারী লাইব্রেরিয়ান, অফিস সহকারী ও ড্রাইভার পদে ১৫ জন কর্মচারী নিয়োগে ২০২১ সালের ২২ আগস্ট প্রকাশিত সার্কুলার জারি করা হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২২ মে নিয়োগ বোর্ডের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে প্রথম ধাপে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৫ পদের বিপরীতে ২৮৪০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফলাফলে ৩৫২ জন উত্তীর্ণ হন। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর প্রশ্নপত্র প্রনয়নসহ পরীক্ষার ফল প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ উঠায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রেজওয়ানুর রহমান সরেজমিন তদন্তে আসেন। কিন্তু পরবর্তীতে পূর্ণ তদন্ত রিপোর্ট দাখিল ছাড়াই নিয়োগ কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রুহুল কুদ্দুস পুরো নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিতের সুপারিশ করেন। ঐ সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ বোর্ডের সভায় কমিটির সভাপতি ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দেলদার হোসেন নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত সুপারিশ আদেশের আগে পূর্ণ তদন্ত প্রতিবেদন নিয়োগ বোর্ডকে না দেওয়া বিষয়ে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।
এদিকে, চাকরি প্রত্যাশী ২৮৪০ জনের প্রত্যেকে শর্ত মোতাবেক ১২০ টাকার সরকারি চালানসহ সর্বমোট ৩ লাখ ৪০ হাজার ৮০০ টাকা দরখাস্তের সঙ্গে জমা দেন। পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ও প্রকাশিত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৩৫২ জনের তালিকা প্রকাশের পর তা স্থগিতে আর্থিক ক্ষতিসহ বহু পরীক্ষার্থী চাকরির বয়স হারিয়ে ভুগছেন চরম হতাশায়। এছাড়া কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে একটানা প্রায় ১০-১১ বছর যাবৎ মাস্টাররোলে কর্মরতরা চাকরি না পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন। সত্বর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাকরী প্রত্যাশীরা জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব ডাক্তার ইমতিয়াজ আহম্মেদ সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ডাক্তার মোহা. দেলদার হোসেন জানান, অনিবার্য কারণবশতঃ ইতোপূর্বে গ্রহণকৃত নিয়োগ প্রক্রিয়ার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বিধি মোতাবেক সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের পর পুনরায় ঐ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।