মাছ ধরার জাল বোনেন ১০৭ বছর বয়সী শিক্ষক মুসলিম উদ্দিন!

মোঃ হায়দার আলী, রাজশাহী
বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার  প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রবীণতম শিক্ষক মো. মুসলিম উদ্দিন। বয়স প্রায় ১০৭ এর বেশী। দীর্ঘ শিক্ষাকতা জীবনে খুব সুন্দর করে ছবি আঁকতেন এবং বাংলা পড়াতেন। শিক্ষাথীরা মনযোগসহকারে পাঠ শুনতেন, ক্লাসের পড়া ক্লাসে হয়ে যেত। প্রাইভেট, কোচিং-এ যাওয়ায় প্রয়োজন ছিল না।

তখন শ্রেষ্ট শিক্ষক নির্বাচনের ব্যবস্থা ছিল না। ফেসবুক, ইউটিউব, স্থানীয়, জাতীয় দৈনিক, অন লাইন পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিল না তাই যে স্কুলে চাকুরী করতেন সেই স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক  জানতেন। শিক্ষক সারা জীবন শ্রোদ্ধার পাত্র হয়েছেন।

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে তাই ছুটে গেছেন, মুসলিম উদ্দিনে প্রিয় ছাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার হায়দার জুয়েল। কুশলাদি বিনিময়ের মাধ্যমে শ্রোদ্ধা জানানতে।

তিনি বলেন, স্যার আমাদের বাংলা পড়াতেন এবং সুস্দর ছবি আঁকতেন। ক্লাসে বই এগিয়ে দিলে লাল কালির ঝরনা কলমে দারুণভাবে রঙিণ করে দিতেন বই। তখন আমরা রঙিণ বই পেতাম না। এখন বয়সের ভারে শরীরের শক্তি কমে গেছে। সবকিছু স্মরণে রাখতে পারেন না। শিক্ষক দিবসে সুস্থতা কামনা করি। আল্লাহ নিকট প্রার্থনা করি স্যার যেন ভালো থাকেন। শিক্ষক দিবসে অনেক শিক্ষার্থী স্যারের নিকট দোয়া গেছেন।

পিরিজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোসাঃ মাহাফুজা খাতুন জলি বলেন, শিক্ষা জাতীর মেরুদণ্ড আর শিক্ষকেরা মানুষ গড়ার কারিগর। মুসলিম উদ্দিন স্যার খুব ভাল মানের শিক্ষক। উনার বড় ছেলের সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যু এবং ছোট ছেলের স্ট্রোক তাঁকে কিছুটা বিপর্যস্ত করেছে। প্রার্থনা করি স্যার তাঁর অদম্য মানসিক শক্তি নিয়ে সুস্থভাবে আরো দীর্ঘদিন আমাদের আলোকবর্তিকা হয়ে থাকুন। তিনি আরও বলেন, ১৯৪৮ সালে সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রে শিক্ষার অগ্রগতি, মানবজাতির ক্রমোন্নতি এবং আধুনিক সমাজের বিকাশ সাধনে শিক্ষক সমাজের অপরিহার্য ভূমিকা ও অবদানের কথা জোরের সাথে ঘোষণা করে শিক্ষকগণ যাতে এসব ভূমিকা পালনের জন্য উপযুক্ত সম্মান ও মর্যাদা ভোগ করতে পারেন তা সুনিশ্চিত করার অঙ্গীকার ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। এ সব গুলি শিক্ষকদের রাষ্টীয়ভাবে সম্মাননা দোয়া প্রয়োজন।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মুনমুন সুলতানা বলেন,  শিক্ষক দিবসে নয়।  এসব গুনি শিক্ষকদের সাথে যখনই সুযোগ পাওয়া যায় তখনই দেখা করা গল্প করা উচিত।  উনার নিকট অনেক কিছু শেখার আছে যা শ্রেণীকক্ষে প্রয়োগ করলে শিক্ষার্থীদের উপকারে আসবে।

Facebook Comments
সংবাদটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

আরো সংবাদ