এলিস হক ।।
উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে গত ২০ জানুয়ারী রোজ শনিবার সকাল ১০টায় ঝিনাইদহ পৌরসভার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আয়োজনে ভুটিয়ারগাঁতী সরকারি প্রাথমিক স্কুল প্রাঙ্গণে পৌরসভা পর্যায়ের দিনব্যাপী আন্তঃপ্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে।
খেলা পরিচালনা করেন আজিজুর রহমান শামীম এবং একেএম হাফিজুল্লাহ আজাদ।
এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল-‘শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’।
ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ‘ক’ গ্রুপের বালক-বালিকাদের ৬টি ইভেন্ট। এগুলো হলো-৫০ মিটার দৌড়, ২৫ মিটার চকলেট দৌড়, দীর্ঘ লাফ, ক্রিকেট বল নিক্ষেপ, গুপ্তধন উদ্ধার ও যেমন খুশি তেমন সাজ।
ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর ‘খ’ গ্রুপের বালক-বালিকাদের ৬টি ইভেন্ট। এইগুলো হলো-১০০ মিটার দৌড়, দীর্ঘ লাফ, উচ্চ লম্ফ, মোরগ লড়াই, ক্রিকেট বল নিক্ষেপ ও অংক দৌড়।
সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর ‘খ’ গ্রুপের বালক-বালিকাদের ৮টি ইভেন্ট। এইগুলো হলো-কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, নৃত্য, পল্লীগীতি/লোকগীতি, দেশাত্মবোধক গান, একক অভিনয়, উপস্থিত বক্তৃতা ও শ্রেষ্ঠ কাব শিশু।
ঝিনাইদহ সদরের আওতায় বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিল।
৫০ মিটার দৌড় ‘ক’ গ্রুপের বালকদের বিভাগে প্রথম হয়েছে শিকারপুর প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর মুহিন। দ্বিতীয় হয়েছে খানে খোদা প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর লিখন ও তৃতীয় হয়েছে উজির আলী সরকারি প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর আপন দাস।
৫০ মিটার দৌড় ‘ক’ গ্রুপের বালিকাদের বিভাগে প্রথম হয়েছে উদয়পুর প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর সুমাইয়া। ছোট কামারকুন্ডু প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর মুসলিমা দ্বিতীয় স্থান এবং তৃতীয় স্থান হয়েছে ভুটিয়ারগাঁতী সরকারি প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর আফিয়া।
২৫ মিটার চকলেট দৌড় ‘ক’ গ্রুপের বালকদের বিভাগে প্রথম হয়েছে উদয়পুর প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর অপু মন্ডল। শহীদ মোশাররফ প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর সিজান শেখ দ্বিতীয় স্থান হয়। তৃতীয় স্থান হয়েছে গোয়ালবাড়ীয়া প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর সজিব।
২৫ মিটার চকলেট দৌড় ‘ক’ গ্রুপের বালিকাদের বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে মথুরাপুর প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ফিরোজা। দ্বিতীয় হয়েছে উদয়পুর প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর জান্নাতুল ফেরদৌস এবং তৃতীয় হয়েছে শহীদ মোশাররফ প্রাথমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর রিপ্তী।
ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী ক্ষুদে খেলোয়াড়দের পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলেও ইভেন্টের সংখ্যা চলনসই। শিক্ষার্থীরা খেলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ভালো করার সুযোগ পায় এখান হতে। কোনোরকমে বাছাইয়ে-যাচাইয়ের কোনো সুযোগ নেই। বিচারকমন্ডলীরা তথা সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত শিক্ষক ও শিক্ষিকারা তাদের বিচার্য বিষয়ে ভালোভাবেই সম্পন্ন করেছেন। সরাসরি মাঠে নামিয়ে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে। বেশ ভালো ক্ষুদে ক্রীড়াবিদ রয়েছে। ভালো করার প্রত্যয়ে শিক্ষার্থীরা ছিল অনেক আত্মবিশ্বাসী। এখান হতে যারা ভালো ফলাফল করবে তারা পরবর্তী ধাপে অর্থাৎ উপজেলা হতে জেলায়, জেলা হতে বিভাগে, বিভাগ হতে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করবে।
তাছাড়াও খেলা পরিচালনা কমিটিদের সুদক্ষ ও মেধার সমন্বয়ে বেশ ভালোভাবেই করতে পেরেছেন। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান পাওয়া মেধাবী ক্ষুদে ক্রীড়াবিদেরা তাদের পারফরমেন্স যথাযথভাবে প্রদর্শন করতে পেরেছে। ঝিনাইদহ সদরের পৌরসভা পর্যায়ের আন্তঃপ্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাকে সফলতার সাথে অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে স্থানীয় অভিজ্ঞ মহলগণ মনে করেন।
একটি সূত্র বলেছে, প্রথম ধাপে স্কুল পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হয়। এরপরের ৬টি ধাপে সকল বাছাই করা শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে। দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন/পৌরসভা/ক্লাস্টার/মহানগর পর্যায়ে এবং তৃতীয় ধাপে উপজেলা/থানা পর্যায়ে এবং চতুর্থ ধাপে জেলা পর্যায়ে এবং পঞ্চম ধাপে বিভাগ পর্যায়ে এবং সবশেষের ষষ্ঠ ধাপে জাতীয় পর্যায়ে আন্তঃপ্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সুন্দরকে আপন ভূবনের বাসিন্দা হয়ে যাপিত জীবনকে আরো সুন্দর করবে….দেশের অগ্রযাত্রায় সার্বিক ক্রীড়া পরিক্রমায় এগিয়ে যাবে…ক্ষুদে খেলোয়াড় বা শিল্পীরা নিজেদের চিনিয়ে দেবে বাংলাদেশের প্রকৃত সংস্কৃতির ধারক-বাহককে…বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের পতাকার মান সমুন্নত রাখবে…খেলার ভেতর দিয়ে..সংস্কৃতির ভেতর দিয়ে এই মহীসোপানের বড় পরিচয় তুলে ধরবে…সাবাশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীদের…!
অন্যদৃষ্টি