সুনামগঞ্জে ঝুঁকিতে ২ হাজার হেক্টর জমির ফসল

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২, ৬:২২ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জে গুরমার হাওরে পানি ঢুকছে।

মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জির ভারী বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের নদ-নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। রবিবার সকালে ঢলের পানি হাওরের পাড় উপচে তাহিরপুর উপজেলার গুরমার হাওরে ঢুকছে। এতে হাওরের দুই হাজার হেক্টর জমির ফসল ঝুঁকিতে পড়েছে।

হাওরপাড়ের গোলাবাড়ি গ্রামের কৃষক খসরুল আলম জানান, শনিবার রাতে হাওরে ব্যাপক পানির চাপ সৃষ্টি হয়। আজ সকালে বাঁধ উপচে হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করে। যেভাবে পানি ঢুকছে, সেটি যদি সারাদিন অব্যাহত থাকে, তাহলে ফসলের ক্ষতি হবে। আর যদি পানির চাপ কমে যায়, তাহলে ফসল রক্ষা পাবে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী জানান, পাহাড়ি ঢলে পানির চাপ বেড়ে আজ সকাল থেকে হাওরে পানি ঢুকছে। লোকজন পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন।

সুনামগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি বেড়েছে ৪০ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া জেলার সীমান্তবর্তী জাদুকাটায় এ সময়ে পানি বেড়েছে ৭১ সেন্টিমিটার, পাটলাই নদে ৪৩ সেন্টিমিটার। সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১৩ মিলিমিটার।

সুনামগঞ্জে এবার প্রথম দফা পাহাড়ি ঢল নামে ৩০ মার্চ। এখন দ্বিতীয় দফা পাহাড়ি ঢলে ফসল বেশি ঝুঁকিতে আছে এ উপজেলার। উপজেলার সব নদ-নদীর পানি আবার বাড়ছে। এতে মাটিয়ান হাওর, গুরমার হাওর, শনির হাওর, মহালিয়া হাওর, সমসার হাওরের ফসল আবার ঝুঁকিতে পড়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান করিব জানান, হাওরে পানি বেড়েছে। এতে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু ভাঙেনি। তবে অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। বাঁধে পানির চাপ বেড়েছে। সমস্যা হচ্ছে টাঙ্গুয়ার হাওরের বাঁধগুলোকে নিয়েই। যেকোনো সময় যেকোনো বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে এবার ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ লাখ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত ৩০ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। ধান কাটায় কৃষকদের পাশাপাশি হাওরে কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার আছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের বরাত দিয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আজ থেকে উজান ও ভাটিতে বৃষ্টি কমবে। উজানের বৃষ্টি আমাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। ১৫ দিন ধরে বাঁধগুলো ঢলের পানির চাপ সামলাচ্ছে। মাটি নরম হয়ে গেছে। আমরা সবাই মিলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছি।

Facebook Comments
Print Friendly, PDF & Email
সংবাদটি শেয়ার করুন


আরো সংবাদ
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com