যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভিন্ন নামে আবেদন করলেও তাদের নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেছেন, দলটির নিবন্ধন আদালতের আদেশে বাতিল হয়েছে। তাই ঐ দলের ব্যক্তিরা ভিন্ন নামে আবেদন করলেও নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ নেই।
সোমবার (২৯ আগস্ট) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন কথা বলেন।
যদি নতুন করে আবেদন করে একই মানুষ, কিন্তু ভিন্ন দল, তাহলে কী সুযোগ আছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একই মানুষ আসবে কি না, তাতো আর বলতে পারব না। যারা আবেদন করছেন, যদি দেখি যে ক্রাইরেটিয়া মেলে না, তাহলে তো দিতে পারব না।’ উচ্চ আদালতের আদেশে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি। আপিল বিভাগ জামায়াতের সেই আপিল খারিজ করে দেয় ২০২০ সালের ৫ আগস্ট।
এদিকে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আলমগীর। তিনি বলেন, সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে ডাকলে তারা কেন্দ্রে যাবে। সশস্ত্র বাহিনী একটি নির্দিষ্ট এলাকায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। তারা টহল দেবে। কোন কেন্দ্রগুলো ভালনারেবল হতে পারে র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনীর কাছে সেই তালিকা আমরা দেই। আলমগীর বলেন, জোরপূর্বক কেউ ভোট দিতে চাইলে প্রথমে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা নেবেন। তারা কুলিয়ে উঠতে না পারলে বিজিবি কিংবা সেনার সহায়তা নেবেন। আমাদের কন্ট্রোল রুম থাকে, সবার হাতে মোবাইল আছে, সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে। সেখানে বিস্তারিত পরিকল্পনা থাকবে। পৃথক দিনে ভোট গ্রহণ করার বিষয়ে সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, একাধিক দিনে ভোট বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে করা কঠিন। তবে এজন্য আইনে কোনো বাধা নেই। তবে একাধিক দিনে নির্বাচন করলে নানা রকম জটিলতা দেখা দেবে। একটা সুবিধা করার জন্য আরো ১০টা অসুবিধা যদি তৈরি হয়, সেই পন্থা অবলম্বন করা ঠিক হবে না।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, কোনো দলের নির্বাচনে আসা, না-আসা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই অধিকারে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারব না। তারা কী ধরনের সহযোগিতা চায় তা আমাদের কাছে এসে বলতে হবে এবং এমন সহায়তা চাইবে, যেটা নির্বাচন কমিশনের দেওয়ার ক্ষমতা আছে।
১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার বিষয়ে তিনি বলেন, ইসি সচিবালয় বলেছে সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা। বর্তমানে যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে অস্থিরতা আছে। এখন কতটুকু কেনা সম্ভব হবে সেটা বলতে পারছি না। সচিবালয় বলেছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে তারা প্রজেক্ট করতে পারবে। পরবর্তীকালে ক্রয় ও প্রশিক্ষণে তারা যেতে পারবে বলে মনে করছে। যদি বিদেশ থেকে আনতে এবং ফান্ড নিয়ে কোনো সমস্যা না হয় তাহলে ১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন সম্ভব।
ইভিএমে কারচুপি নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, যে বলছে তাকে প্রমাণ দিতে হবে। উনি যদি আমাদের কাছে এসে দেখতে চান, জানতে চান, আমার উত্তর দেব। উনি যদি প্রমাণ দিতে পারেন, তাহলে বাতিল করে দেব।