জীবন এক চলন্ত গাড়ি। সেই গাড়ি চলছে অবিরাম। কোনও ভাবেই আটকে রাখা সম্ভব নয়। সকল ঝড়-ঝাপ্টা অতিক্রম করেই সামনের দিকে গন্তব্যে বহমান। কর্ম নামের সেই যুদ্ধে প্রান্তিক সমাজের হতদরিদ্র মানুষগুলোকে সকল সময়েই তাদের পার করতে হয় কঠিন মূহুর্তের দিনগুলি। আরামের বিছানা হারাম করেই বেরুতে হয় কঠিন সেই হাড় কাপানো কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে দু’মুঠো অন্নের জন্য।
বেশ কয়েক দিন ধরেই দেখা গেছে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে শৈত্যপ্রবাহ। দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের লালনের জনপদের মানুষগুলো হিমেল হাওয়া এবং ঘন কুয়াশায় হয়ে গেছে যবুথবু। গ্রামের খেটে খাওয়া কৃষি দিনমুজুরেরা পড়েছে চরম বেকায়দায়। রবিবার(২৪ জানুয়ারী) অর্ধদিবস ছিলো কুয়াশাচ্ছন্ন পুরা উপজেলা। খালি পায়ে কাদা-পানির মধ্যে বরো ধান রোপন করতে গিয়ে তাঁরা চরম কষ্টের সম্মূখীন হচ্ছেন। পরিবারের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেয়ার এই অঞ্চলের কৃষি মুজুরেরা ঘনো কুয়াশা আর তীব্র শীতকে বরণ করে নিয়েই মাঠে বোরো ধান রোপনের কাজ করে যাচ্ছেন।
এই ঘটনায় কালের স্বাক্ষী হতে অন্যদৃষ্টি’র প্রতিনিধি হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রিশখালী, ভেড়াখালী, দখলপুর, কেষ্টপুর,পারদখলপুর, দৌলতপুরসহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখতে পায় কৃষক এবং কৃষি দিনমুজুরেরা কেউ জমিতে পানি দেয়া, কেউ লাঙ্গল মই দেয়া,কেউ বিজতলা হতে চারা সংগ্রহ, আবার কেউ জমিতে চারা রোপণ সহ পার করছে নানা ব্যাস্ততায়।
এবিষয়ে দখলপুর গ্রামের কৃষক মকলেচ উদ্দিন, সোনাতনপুরের কুদরত আলী, আব্দুল হান্নান,আয়নাল হোসেন জানান,অগ্রায়ন মৌসুমে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় আমি এই বোরো আবাদে ধান চাষের উদ্বোগ নিয়েছি।বীজ তলা হতে ধানের চারা তুলার সময়ে দখলপুর গ্রামের কয়েক জন দিনমুজুরের সাথে কথা বললে তারা জানান, কাজ না করলে খাবো কি? আমন ধান কাটার পরে বেশ কয়েক দিন ছিলাম বেকার। শীতের কারণে ঘরে বসে থাকলে সংসার কিভাবে চলবে?
এদিকে চলতি বোরো মৌসুমে ১০ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হরিণাকুণ্ডু উপজেলা কৃষি অফিসার হাফিজ হাসান।