স্থানীয় সরকার নির্বাচন জাতীয়র আগে চায় জামায়াত

অন্যদৃষ্টি অনলাইন
বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫, ৪:১৯ অপরাহ্ন

দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার প্রজ্ঞাপন পেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠকে করে বেশ কিছু মতামত দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

সিইসি’র সাথে এই বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল কয়েকটি আনুষ্ঠানিক মতামত দিয়েছে।

আনুষ্ঠানিক এই মতামতগুলোর মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা, সংখ্যানুপাতির প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন, প্রবাসী ভোট ও অনলাইনে ভোট রয়েছে।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি সিইসি’র সাথে বৈঠকে এসব মতামত দেন।

বৈঠক শেষে হামিদুর রহমান আযাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে আমাদের দাবি স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা। এটা এবারের জন্য ও ভবিষ্যতের জন্যও অন্তর্বর্তী সরকারের বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করা স্থানীয় সরকার নির্বাচন।

তিনি বলেন, একই সাথে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ যাতে নিশ্চিত হয়, সে জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিন্ড তৈরি করতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড শুধু ভাষা হিসেবে নয়, কার্যকরভাবেও যেন হয়।’

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সময় যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়, তাহলে এটা অনেক বেশি ফেয়ার ও গ্রহণযোগ্য হবে। এতে জনগণের সঠিক প্রতিনিধি আসবে। আর স্থানীয় সরকার নির্বাচন যদি দলীয় সরকারের অধীনে হয়, তা হলে দেখা যায় দলীয় প্রার্থীদের চেয়ারম্যান বা মেম্বার করা জন্য দলীয় প্রভাব বিস্তার করা হয় এবং সরকার পুরো প্রক্রিয়া কাজে লাগিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়ে আনে। এতে জনমতের প্রতিফলন হয় না। পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত হয়। সে কারণে আমরা বলেছি, যদি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের হয়, এটা ফেয়ায় হবে, গ্রহণযোগ্য হবে। সেটা আমরা দাবি করেছি।’

তিনি আরো বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পিআর পদ্ধতি হচ্ছে সুন্দর পদ্ধতি। ইসির কাছেও আমরা আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে এই দাবি উত্থাপন করেছি।

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, প্রবাসীদের ভোটার করার উদ্যোগের মধ্যে পোস্টাল ব্যালট ও অনলাইন পদ্ধতিতে ভোটের পক্ষে মতামতও তুলে ধরেছি।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে পোস্টাল ভোটার ও অনলাইন ভোটার পদ্ধতি যেগুলো আছে, এগুলো ভোট গ্রহণের জন্য পদ্ধতি হিসেবে নিতে পারেন।’

হামিদুর রহমান আযাদ আরো বলেন, ‘প্রতীকসহ নিবন্ধন পুনর্বহাল করায়, নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। অন্যায়, অবিচার ও ধামাচাপা দিয়ে জোরপূর্বক রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে, ন্যায়কে চাপিয়ে রাখা যায় না।

তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে একেবার অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে দাড়িপাল্লা দলীয় প্রতীকও কেড়ে নেয়া হয়। তখন চরম অন্যায় করা হয়েছিল। আমাদের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, মঙ্গলবার গ্যাজেট আমাদের সেই অধিকার আদালতের আদেশের মাধ্যমে ফিরে এসেছে এবং দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে। আদালতের আদেশের পর গেজেট প্রকাশে গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশার প্রতিফলন হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন আগামী নির্বাচনে আমরা প্রতীক নিয়ে অংশ নেব। জনগণের পছন্দের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেয়ার যে বাধা ছিল, এটা উঠে গিয়েছে এবং এটা আরেকটা নতুন দৃষ্টান্ত হয়েছে।

বৈঠক অংশ নেয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও আইনজীবীরা হলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের এবং জামায়াত নেতা ও বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার।

সূত্র: বাসস

Facebook Comments
সংবাদটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

আরো সংবাদ