ইতালি গত গ্রীষ্মের জরুরি পরিস্থিতির পর আরেকটি খরার মুখোমুখি হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে শুষ্ক শীতকালীন আবহাওয়া ও আল্পস পর্বতে তুষারপাত স্বাভাবিকের তুলনায় অর্ধেকেরও কম হওয়ার পর এমন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বৈজ্ঞানিক ও পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির ভেনিসে বন্যা প্রাথমিক উদ্বেগের বিষয় হলেও এখানে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক নিচে নেমে গেছে, ফলে শহরটির বিখ্যাত কিছু খাল দিয়ে গন্ডোলা, ওয়াটার ট্যাক্সি ও অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভেনিসের সমস্যাগুলোর জন্য বেশ কয়েকটি বিষয়কে দোষারোপ করা হচ্ছে; এগুলো হলো বৃষ্টির অভাব, বায়ুমণ্ডলীয় উচ্চচাপ, পূর্ণিমা ও সমুদ্র স্রোত। সোমবার পরিবেশবাদী গোষ্ঠী লেগামবিয়ান্তে জানিয়েছে, ইতালির নদী ও হ্রদগুলো পানির অভাবে ভুগছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে এমন সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা। আল্পস পর্বত থেকে নেমে আড্রিয়াটিক সাগরে যাওয়া ইতালির দীর্ঘতম নদী পো-তে বছরের এই সময়ে সাধারণত যে পরিমাণ পানি থাকে এখন তার চেয়ে ৬১ শতাংশ কম আছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা।
গেল জুলাইয়ে ইতালি পো নদীর অববাহিকা অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। এই অববাহিকা অঞ্চলে ইতালির কৃষিপণ্যের প্রায় এক তৃতীয়াংশ উৎপাদিত হয়। ঐ সময় ইতালি ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক খরার মুখোমুখি হয়েছিল। দৈনিক কোরিয়ারে দেলা সেরায় দেওয়া উদ্ধৃতিতে ইতালির বিজ্ঞান গবেষণা ইনস্টিটিউট সিএনআর এর আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ মাসিমিলিয়ানো পাসকুই বলেছেন, ‘আমরা পানিসংকটের মধ্যে আছি যা ২০২০-২১ এর শীতকাল থেকে আস্তে আস্তে তীব্র হয়ে উঠছে। এটি কাটিয়ে উঠতে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৫০ দিন ধরে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টি দরকার আমাদের।’
উত্তর ইতালির গারদা হ্রদের পানির স্তর রেকর্ড নিচে নেমে গেছে। এতে হ্রদটির মধ্যবর্তী ছোট দ্বীপ সান বিয়াজোতে হেঁটেই পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে।
১৫ দিন ধরে পশ্চিম ইউরোপের আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করছে বায়ুমণ্ডলীয় একটি উচ্চচাপ। এর কারণে মৃদু তাপমাত্রা দেখা যাচ্ছে, যা সাধারণত বসন্তের শেষ দিকে দেখা যায়। তবে সর্বশেষ আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আসছে দিনগুলোতে আল্পসে তুষারপাত ও সংলগ্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। -রয়টার্স।