ফরওয়ার্ড
-পর্ব আহমেদ
————————————————————————————————–
আমার আইডিতে কে জানি ফরওয়ার্ড করে মেসেজ পাঠিয়েছে, “ভাই একটা প্রেম করিয়ে দে”। নিচে লেখা, যদি আপনি এটা ফরওয়ার্ড করেন তাহলে ক্রাশ আপনাকে পাত্তা দিবে। আমি সহজ সরল মানুষ। আমিও ফরওয়ার্ড করা শুরু করলাম।
আইডিতে ২৩২ জন ফ্রেন্ড ছিলো, সবাইকে ফরওয়ার্ড করে ক্লান্ত হয়ে ফ্রিজ খুলে পানির বোতল নিতেই, মোবাইল থেকে টুং করে শব্দ হলো। মেসেজ দেখেই তব্দা খেয়ে গেলাম। আমাদের কলেজের স্যার মেসেজ পাঠিয়ে বললো, তুমি পর্ব আহমেদ না? তুমি এসব কী দিচ্ছো? কালকে কলেজে এসে আমার সাথে দেখা কইরো তো।
মেসেজ সিন করা তো দূরে থাক। আমি সাথে সাথে আইডি ডি এক্টিব করে। নিজের অজান্তেই হাত কামড়ে ধরে, গেছি গেছি বলে চেচিয়ে উঠলাম।
আব্বা কল দিচ্ছেন, রিংটোন বেজেই যাচ্ছে বেজেই যাচ্ছে। বিরক্ত হয়ে কল ধরতেই আব্বা চেচিয়ে উঠলেন, পর্ব এসব কী ফরওয়ার্ড করেছিস তুই? আমার মন চাচ্ছে আমেরিকা থেকে এখনি চলে আসতে, তর পুরো মাসের হাত খরচ বন্ধ। আমি আব্বা আব্বা বলতে বলতেই কল কেটে দিলেন। এখন নিজেকে নিজে গালি দিচ্ছি।
পুরো বাসায় জানাজানি হয়ে গেছে। বাসায় আমার জন্য ভাত খাওয়া বন্ধ। ছোটো বোন মাঝে মধ্যে এসে উকিঝুকি মারছে।
ক্রাশ ওয়াসআপে কল দিয়ে বললো, পর্ব আমার সাথে রিলেশন করবে? আমি তোমার ওই ফরওয়ার্ড করা মেসেজ দেখেছি। তোমার জন্য দুঃখ হচ্ছে একটু একটু; । কালকে বাবু খাইছো রেস্তোরাঁয় দেখা কইরো, সাথে একটা লজ্জার ইমোজি। আমি কী বলবো খুজে পাচ্ছি না। হঠাৎ কেনো জানি নাচতে ইচ্ছে হলো। ফুল সাউন্ড দিয়ে গান বাজিয়েই নাচতে লাগলাম। খারাপের সাথে ভালো হবে এটা আমি ভাবিনি। আব্বা আর স্যার গোল্লায় যাক। ক্রাশকে একটা ছোট্ট কবিতা বলে প্রপোজ করবো ভাবতেছি।
সুখে দুঃখে পাশে থেকো, হে সুন্দরী ক্রাশ।
মাঝ পথে টাকা ওয়ালা বুড়ার সাথে বিয়ে করে দিয়োনা আমায় বাঁশ।
কেঁদে কেঁদে অস্থির হবো, তুমি দিবে হাসি।
বাবু খাইছো রেস্তোরাঁয় বসে বলছি, আমি তোমায় ভালোবাসি।