গত মঙ্গলবার ১৬ই জানুয়ারি মালেশিয়ার কেলাং বন্দরে জাহাজের একটি খালি কন্টেইনারে পাওয়া শারিরীক প্রতিবন্ধী কিশোরটি প্রাথমিক ভাবে রোহিঙ্গা শিশু ধারণা করা হলেও কিশোরটি কুমিল্লা জেলা মনোহরগঞ্জ উপজেলার ৫ নং ঝলম (দঃ) ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া এলাকার দিনমজুর ফারুক মিয়া ছেলে রাতুল। মানষিক ভারসাম্যহীন শারীরিক প্রতিবন্ধী কিশোর রাতুল (১৪)।
দিনমজুর ফারুকের ৩ ছেলে। রাতুল সবার বড়। আর্থিকভাবে ফারুক অনেকটাই দুর্বল যার ফলে আর্থিক সংকটের কারণে ছেলে নিখোঁজ হবার পরও থানায় জিডি করতে পারে নি ফারুক। অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে কোনো রকম দিন যাচ্ছে তার পরিবারের।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১২ জানুয়ারি ছেড়ে যাওয়া ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ জাহাজের একটি খালি কনটেইনারে আটকা পড়ে রাতুল। জাহাজটি মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে যাওয়ার পর ১৬ জানুয়ারি কনটেইনারের ভেতর থেকে শব্দ শুনতে পান নাবিকেরা। এরপরই কেলাং বন্দরকে অবহিত করা হয়। পরদিন ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কনটেইনার খুলে ওই রাতুলকে উদ্ধার করা হয়।
রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া এ প্রতিবেদককে জানান, ২ মাস ৭ দিন আগে শুক্রবার দুপুরের পরে বাসা থেকে বের হয় রাতুল। তারপর থেকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না রাতুলকে। অসুস্থ সন্তানকে হারিয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারের সদস্যদের মাঝে। সন্তানকে খোঁজে পেতে বাবা মা সব আত্নীয় স্বজনদের বাসায় খোঁজ খবর নেয় কিন্তু কোথাও কোনো খোঁজ মিলে না রাতুলের। দুইমাস ধরে খোঁজ না পেয়ে অনেকটাই আশার প্রদীপ নিভে গিয়েছিল পরিবারটির।
শুক্রবার সময় টিভিতে একটি প্রতিবেদনে নিখোঁজ সন্তানের সন্ধান পেয়ে আবেগে প্লাবিত হয়ে সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশায় অশ্রু চোখে রাতুলের মা রোকেয়া বেগম এ প্রতিবেদককে জানান, আমি আমার সন্তানের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।গতকালকে সময় টিভিতে আমার ছেলেকে দেখে আমার সহ্য হচ্ছে না। আপনারা যেইভাবে পারেন আমার ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দেন। আমি সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি যেন সরকার আমার ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেয়।
সময় সংবাদের প্রতিবেদনের পর থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং এলাকাবাসীর মধ্যে রাতুলকে ফিরে পেতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাদের দাবি যেন সরকার রাতুলকে মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেয়।
রাতুল বর্তমানে মালেশিয়ার একটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
উল্লেখ্য, জাহাজটি ১২ই জানুয়ারী মালেশিয়ার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে যায়।