কথাগুলো কার?
ইন্ডিয়ান ওয়াটার অথরিটির তিনজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা — অজিত পাটেকার, সোনিয়া ত্রিপাঠি ও কৈলাস সোলাংকি — আমার দিকে এগিয়ে এলেন যখন আমি বাংলাদেশকে অভিন্ন নদীগুলোর পানির নায্য হিস্যা না দেয়ার জন্য ভারতের সমালোচনা করে জাতিসঙ্ঘে বক্তব্য দেয়ার পর মঞ্চ থেকে নেমে এলাম।
আমাকে একপাশে ডেকে নিয়ে মৃদু স্বরে বললেন, আমি নাকি এটাই জানিনা যে তিস্তার যে অংশ ভারতে আছে সেখানে তাদের যা ইচ্ছা করার ক্ষমতা আছে।
আমি আপত্তি জানিয়ে দৃঢ় কন্ঠে বললাম, মোটেও তা নয়। জাতিসংঘ জলপ্রবাহ আইন বা ওয়াটারকোর্স কনভেনশন এর ৭(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোন ট্রান্সবর্ডার রিভার বা আন্তঃসীমান্ত নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে কোন দেশ অপর দেশের প্রাপ্য ডাউনস্ট্রিম বা নিম্নপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
এবার তারা জানালেন, এই ট্রিটি ভারত অনুসমর্থন করেনি বলে মানতে বাধ্য নয়। তাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আমি জবাব দিলাম, রেটিফাই করেনি বলে এই আইনের ‘রেশিও ডিসাইডেন্ডি’ মানতে ভারত বাধ্য নয় ঠিকই, কিন্তু জাতিসঙ্ঘের একটি মেম্বার স্টেট হিসেবে সকল ইউএন চার্টারের ‘অবিটার ডিক্টা’ মানতে ঠিকই বাধ্য।
এরপরও তারা নিজেদের কুযুক্তির পক্ষে এমনভাবে কুতর্ক করে যাচ্ছিলেন যেন মনে হচ্ছিল, তারা ডানিং ক্রুগার এফেক্টে আক্রান্ত।
সবশেষে মুখে বিদ্রুপের হাসি নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, মঞ্চে আমি যা যা বললাম, বাংলাদেশের কোন সরকারতো কখনো তা বলেনি। তাহলে কথাগুলো আমার ব্যক্তিগত? নাকি বাংলাদেশ সরকারের?
আমি নিজের বুকে হাত রেখে আর তাদের চোখে চোখ রেখে জানিয়ে দিলাম, কথাগুলো বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণের।
কি বলেন আপনারা?
কথাগুলো আপনাদেরতো?